মোহাম্মদ শাহজাহান:: খাগড়াছড়িতে বন্যায় কৃষকদের কোটি টাকার গ্রীষ্মকালীন সবজি নষ্ট হয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আউশধান। পাহাড়ি ঢলে নষ্ট হয়েছে আমনের বীজতলা। বন্যায় জেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দীঘিনালা উপজেলার ফসল। চার পাঁচদিন পানিতে তলিয়ে থাকায় জমিতে পঁচে গেছে বিভিন্ন ধরনের সবজির চারা ও ফসল।
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার সবজির মাঠ হিসেবে পরিচিত ‘ফুডবিল’ এলকাসহ নিচু এলাকাগুলোও তলিয়ে ছিলো বন্যার পানিতে। চেঙ্গি নদীর দুই পাশের চাষাবাদ করা গ্রীষ্মকালীন সবজিসহ অন্যান্য ফসল ভেসে গেছে বন্যার পানিতে।
খাগড়াছড়ি সদরের কৃষক মো. আবু বক্কর দুই একর জমি লিজ নিয়ে চাষ করেছেন বিভিন্ন ধরনের সবজির। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় জমিতে বন্যার পানি উঠায় বেগুন গাছসহ অনেক সবজির গাছ মরে গেছে। মাচায় কোনোরকমে টিকে আছে কাকরল, পটলসহ কয়েক ধরনের সবজির গাছ। অধিকাংশ গাছের পাতা বিবর্ণ হয়ে গেছে।
আবু বক্কর জানান, ‘ এই জমিতে এখন পর্যন্ত দুই লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। কিছু গাছে মাত্র ফলন আসা শুরু হয়েছে। এমন সময় বন্যা হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছগুলো মরে যাচ্ছে। এ অবস্থা হলে খরচের টাকাটাই উঠবে না’।
খাগড়াছড়ি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে জেলায় ৩৩ হেক্টর গ্রীষ্মকালীন সবজির জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আউশধানের ক্ষতি হয়েছে ২২ হেক্টর জমির। আমনের বীজতলা নষ্ট হয়েছে ১১৩০ জন কৃষকের। বন্যায় জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সর্বমোট ১৯৩০ জন কৃষক। টাকার অঙ্কে প্রায় দেড় কোটির কাছাকাছি।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ বাছিরুল আলম ঢাকা পোস্ট’কে জানান, বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে তথ্য পাঠানো হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া হলে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবে।
বন্যায় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মাছ চাষের পুকুর তলিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই জেলা মৎস অফিসে। খাগড়াছড়ি জেলা মৎস কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আরিফ হোসাইন জানান, জেলার কোথাও মৎস চাষের ক্ষতি হয়নি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলা গুলোতে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য আসেনি।