সব
facebook raytahost.com
সংঘাতের আগুনে জ্বলছে পাহাড়,নিহত তিন | Protidiner Khagrachari

সংঘাতের আগুনে জ্বলছে পাহাড়,নিহত তিন

সংঘাতের আগুনে জ্বলছে পাহাড়,নিহত তিন

অনির্দিষ্টকালের ১৪৪ ধারাতেও সংঘর্ষ,গুলিবর্ষণ, ১১ সেনা সদস্যসহ আহত অসংখ্য।

স্টাফ রিপোর্টার:: সংঘাতের আগুন জ্বলছে পাহাড়ে। খাগড়াছড়ির পর এবার রণক্ষেত্র গুইমারা উপজেলা। অনির্দিষ্টকালের ১৪৪ ধারার মধ্যে গুইমারার রামসু বাজারের মুখ রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা সড়ক অবরোধে সমর্থনে পিকেটাররা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে টায়ারে ও গাছের গুড়ি ফেলে সড়কে আগুন দেয়।

স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে অবরোধকারীদের সাথে সেনাবাহিনীর বাকবিতন্ডা ও ধাওয়া,পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় অবরোধকারীরা সেনাবাহিনীকে লক্ষ করে ইটপাটকেট নিক্ষেপ করলে ১২ সেনা সদস্য আহত হয়। সেনাবাহিনীও অবরোধকারীদের ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে গুইমারা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।

এ ঘটনায় ৩ জন নিহত হলে তারা কার গুলিতে নিহত হয়েছে তা নিশ্চিত করছেনা কোন প্রশাসন। অসংখ্য স্থানীয় বসবাসকারী আহত হয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিতে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো: আরেফিন জুয়েলকে বেশ কয়েকবার মুঠোফোন কল দিলেও তিনি তা রিসিভ না করায় প্রশাসনের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রণক্ষেত্র গুইমারা

রামসু বাজারের আশপাশের এলাকায় অগ্নিসংযোগসহ স্থানীয় বাঙালিদের সাথে সংঘর্ষ রূপ নেয় সংঘাতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ,সেনাবাহিনী,বিজিবিসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঠে নামে। এ ঘটনায় পাহাড়িদের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেনাবাহিনী ও একটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলকে গুলিবর্ষণের জন্য দায়ী করা হলেও এ বিষয়ে কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত উত্তেজনা এবং থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে গুইমারা ও খাগড়াছড়িতে।

এদিকে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার এর সভাপতিত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমাসহ প্রশাসনের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ চলাকালে খাগড়াছড়িতে দুপুরের পর থেকে বিকেল পর্যন্ত সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত ছিলো খাগড়াছড়ি জেলা শহর। দুপুর ২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক।

সংঘর্ষের উপজেলা,স্বনির্ভর,চেঙ্গী এস্কায়ার,নারিকেল বাগান,মহাজনপাড়া এলাকায় পাহাড়ি-বাঙালী দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে ব্যাাপক উত্তোজন আর ইটপাটকেলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আহত হয়েছে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জনেরও বেশি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪৪ ধারা জারি করেছেন জেলা প্রশাসন।

পুলিশ,সোনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে এক পর্যায়ে খাগড়াছড়ির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার এক বিজ্ঞপ্তিতে আদেশ দেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও সদর উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি এবং জনগণের জান ও মালের ক্ষতিসাধনের আশঙ্কা রয়েছে।

তাই ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারা জারির আদেশ করা হয়। ১৪৪ ধারা জারির দ্বিতীয় দিনেও থমথমে পরিস্থিতি ছিলো খাগড়াছড়িতে। অনেকটা জনশুন্য ছিল জনসমাগমের জেলা শহর খাগড়াছড়ি। অতিরিক্ত প্রশাসনের মাঠে নজরদারী,টহল এবং শর্তকতা দেখা যায় খাগড়াছড়ি। গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হতে দেখা যায়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও সদর উপজেলায় এই আদেশ জারি করা হয়। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত চয়ন শীল নামে এক কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। ওই কিশোর বর্তমানে ৫ দিনের রিমান্ডে রয়েছে। অজ্ঞাতনামা আরো ২ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবিতে জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকে খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ ডাকে। শনিবার সকাল থেকে অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ির সঙ্গে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটির সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সাথে দীঘিনালা, পানছড়ি, রামগড়, মহালছড়িসহ ৯ উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও সদর উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি এবং জনগণের জান ও মালের ক্ষতিসাধনের আশঙ্কা দেখা দেয়ায় ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারা জারি করেন জেলা প্রশাসক।

মারমা কিশোরীকে ধর্ষনের প্রতিবাদ এবং ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে জুম্ম ছাত্র জনতার ব্যানারে চলছে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ৩য় দফার সড়ক অবরোধ কর্মসুচী। এদিকে খাগড়াছড়ি জেলায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ও জনগনের জান ও মালের ক্ষতি সাধনের আশঙ্খায় খাগড়াছড়ি ও গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারী অব্যাহত রয়েছে। বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি। এদিকে সাজেকে আটকে পড়া প্রায় ২১৪৭ জন পর্যটক কে সোমবার রাতেই সেনাবাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তায় ঢাকার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :

সহিংসতা ও হত্যার ঘটনায় তিন মামলা

সহিংসতা ও হত্যার ঘটনায় তিন মামলা

সংঘাত জাতীয় নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত

সংঘাত জাতীয় নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত

সহিংসতায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

সহিংসতায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

ক্ষত-বিক্ষত চিহ্ন বয়ে বেড়োচ্ছে ঘটনাস্থল

ক্ষত-বিক্ষত চিহ্ন বয়ে বেড়োচ্ছে ঘটনাস্থল

গুইমারায় নিহত তিনজনের পরিচয় মিলেছে

গুইমারায় নিহত তিনজনের পরিচয় মিলেছে

আতঙ্ক শঙ্কায় থমথমে খাগড়াছড়ি-গুইমারা

আতঙ্ক শঙ্কায় থমথমে খাগড়াছড়ি-গুইমারা

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈকত হাসান
বার্তা সম্পাদক : মো: আল মামুন সিদ্দিক
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা।
ফোনঃ ০১৮৩৮৪৯৯৯৯৯
ই-মেইল : protidinerkhagrachari@gmail.com
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Design & Developed By: Raytahost .com