খাগড়াছড়িতে দুই দিনব্যাপী পিসিপি’র ২১তম কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলন

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:: বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর ২১তম কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলন গত ৬-৭ অক্টোবর ২০২৩ খাগড়াছড়িতে সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলনের ১ম অধিবেশনে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর অন্যতম সংগঠক ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি অংগ্য মারমা নিপীড়িত জাতি ও জনগণের সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে পিসিপি নেতা-কর্মীদেরকে আরো যোগ্য, দক্ষ ও লড়াইয়ে উপযুক্ত সৈনিক হিসেবে গড়ে উঠার আহ্বান জানিয়েছেন।
দু’দিন ব্যাপী প্রতিনিধি সম্মেলনের প্রথম দিন (৬ অক্টোবর) পিসিপির দলীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে দলীয় পতাকা উত্তোলন করে ২১তম প্রতিনিধি সম্মেলন উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও দাবিনামা সংশোধন, প্রতিনিধিদের বক্তব্য পর্বসহ ৫টি অধিবেশনে ভাগ করে সম্মেলন সম্পন্ন করা হয়।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ দীঘিনালায় সেনা মদদপুষ্ট মুখোশ বাহিনী সন্ত্রাসী কর্তৃক অপহৃত হওয়া কলেজ শিক্ষার্থী কর্নিয়া চাকমা’র মাধ্যমে তিন জনকে ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনা প্রদান করেন পিসিপির সভাপতি অঙ্কন চাকমা।

“লড়াইয়ে উপযুক্ত কর্মী হোন, সংগঠনকে আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করুন” এই স্লোগানে ২১তম কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে ১ম অধিবেশনে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) কেন্দ্রীয় সভাপতি অঙ্কন চাকমা সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর অন্যতম সংগঠক অংগ্য মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক পরিণীতা চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতি চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রজেন্টু চাকমা। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শুভাশীষ চাকমা।
সম্মেলনে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন পিসিপি কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সোহেল চাকমা। শোক প্রস্তাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক আদোলনের প্রথম শহীদ ভরদ্বাজ মুনি চাকমা, রুপন, সমর-সুকেশ-মনতোষ, মংশে, ক্যজাই, মিঠুন, তপন, এল্টন, পলাশ চাকমাসহ সারা বিশ্বে নিপীড়িত জাতি ও জনগণের মুক্তি লড়াই আত্মনিবেদনকারী বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে ২ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। প্রাকৃতিক বৈরী পরিবেশ মোকাবিলা করে তিন পার্বত্য জেলা, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক পিসিপি’র প্রতিনিধি-পর্যবেক্ষক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে ১ম দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, অর্থ সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদকের রিপোর্ট উত্থাপন করা হলে উপস্থিত প্রতিনিধিরা রিপোর্টের ওপরে পর্যালোচনা, সমালোচনা, সংযোজন-বিয়োজন করে করতালির মাধ্যমে পাস করেন। প্রথম দিনের তৃতীয় অধিবেশনে ১৯৯২-২০১৩ সালের সংগঠনের লড়াই সংগ্রামে ওপর নির্মিত ভিডিও, ২০১৮ সালে ৭ মার্চ মুখোশ প্রতিরোধ দিবস পালন করতে গিয়ে খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর বাজারে অকুতোভয় সহযোদ্ধাদের প্রতিরোধ সংগ্রামের ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
প্রতিনিধি সম্মেলনের ১ম অধিবেশনে ইউপিডিএফ সংগঠক অংগ্য মারমা বলেন, বাস্তব পরিস্থিতিতে পিসিপিকে যথোপযুক্ত ও বাস্তবমুখী কর্মসূচি দিতে হবে। পিসিপি অন্যায়ের কাছে কোনদিন আপোষ করেনি। এখনও পিসিপির প্রতিবাদী ধারা অব্যাহত রয়েছে। ১৯৯২ সালে রাঙামাটিতে ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্যে সুনির্দিষ্টভাবে ‘স্বায়ত্তশাসন’ দাবি উত্থাপন করা হয়।



অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন