২০ ঘণ্টা পর ৪ পঁচন ধরা লাশ উদ্ধার,পরদিন ময়না তদন্ত শেষে হস্থান্তর,আহাজারী
আল-মামুন:: খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার অনিলপাড়ায় ৪ ইউপিডিএফ নেতাদের গুলি করে হত্যার প্রায় ২০ ঘন্টা পর নিথর পঁচন ধরা মরদেহ উদ্ধার করেছে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পানছড়ি থানা পুলিশ,অভিযোগ ইউপিডিএফের। পরে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর২০২৩) সকালে খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে নিহতদের স্বজনদের কাছে হস্থান্তর করা হয়।

এ সময় স্বজনদের আহাজারীতে ভারী হয়ে উঠে হাসপাতালসহ আশপাশের এলাকা। পরে নিহতদের গুলিতে ক্ষত-বিক্ষত লাশের ময়না তদন্তের পর কপিনে করে নিয়ে যাওয়া হয় খাগড়াছড়ি স্বনির্ভর ইউপিডিএফ অফিসের সামনে। সেখানে দুপুর ২টার পর প্রসীতপন্থী ইউপিডিএফ সমর্থিত পিসিপি,গণতান্ত্রিক যুব সমিতি ও হিল ইউমেন্স ফেডারেশন এর নেত্রীরা গভীর শ্রদ্ধা,ভালোবাসায় দলীয় পতাকা নিয়ে স্যালুট জানান সহযোদ্ধারের।

পরে ৪টি লাশের কপিনে তাদের ছবি যুক্ত করে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে এক সারিতে লাশবাহী গাড়ীবহর নিয়ে পানছড়ির দিকে ছুটে চলে গাড়িগুলো। এ ঘটনার জন্য স্বজনদের পক্ষ থেকে খুনের ঘটনায় কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে রাজি হননি কেউ। অন্যদিকে দূর্গম এলাকা থেকে লাশ উদ্ধারের কথা জানান পানছড়ি থানার ওসি সফিউল আজম।

এদিকে গত সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে লোগাং ইউনিয়নের অনিলপাড়া এলাকায় প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হয়, প্রসীতপস্থী ইউপিডিএফ সমর্থিত গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি বিপুল চাকমা,খাগড়াছড়ি জেলা সহ-সভাপতি লিটন চাকমা,পিসিপির সহ-সভাপতি সুনীল ত্রিপুরা ও ইউপিডিএফের সদস্য রুহিনসা ত্রিপুরাসহ ৪ জন নিহত।

এসময় অস্ত্রধারীর আরো ৩ জনকে ধরে নিয়ে যায়। চার জনকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় ইউপিডিএফ ও সহযোগী সংগঠনগুলো তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে হত্যার বিচার দাবী করেন। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিককে দায়ী করলেও সে দায় অস্বীকার করে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক তাদের বিরুদ্ধে ইউপিডিএফ অপপ্রচার বলে পাল্টা বিবৃতি দেয়।

এ ঘটনায় ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ কর্মসূচী ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বর প্রতিবাদ সমাবেশ ও শোক সভা, বিভিন্ন স্থানে কালো পতাকা উত্তোলন, ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত পানছড়ি বাজার বয়কট (প্রয়োজনে বয়কটের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে)। ১৭ ডিসেম্বর পানছড়ি উপজেলাব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট ও ১৮ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি জেলাব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ সড়ক অবরোধের ডাক দেয় সংগঠনটি।
এতো সবের পরও স্থানীয়দের প্রশ্ন পাহাড়ের এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড,পাহাড়ে একের পর এক আধিপত্যের লড়াইয়ে রক্তের হলিখেলা থামবে কবে? আধিপত্যের ধারাবাহিকতায় সবুজ পাহাড় হচ্ছে তাঁজা রক্তে রঞ্জিত। মা হারাচ্ছে তার সন্তান,স্ত্রী হারাচ্ছে তার স্বামী আর সন্তান হচ্ছে পিতৃহারা। দ্বন্দ্বের গোলাগুলিতে রক্তাক্ত সবুজ পাহাড়ের খেলা থামাবে কে? এমনটাই প্রশ্ন সাধারন পাহাড়বাসীর।



অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন