স্টাফ রিপাের্টার:: খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় তাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো.রেজাউল করিম সরকারের পদত্যাগ দাবিতে আন্দােলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করে অচিরেই পদত্যাগ না করলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী জানান ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
এসব বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল করে তাইন্দং বাজারে গিয়ে সমাবেশ করে। এ সময় বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে সামিল হয় সাবেক শিক্ষার্থীরা। বিগত বছরে একের পর এক ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তুলে ধরে আর্থিক অনিয়ম,অতিরিক্ত টাকা আদায়,স্বেচ্ছাচারিতা, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর ঘটনা।
আগামী ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে শিক্ষার্থীরা গণস্বাক্ষরিত অভিযাগপত্র মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করে। পদত্যাগ না করলে লংমার্চের হুশিয়ারী জানিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিগত বছরের হিসাব তলব করা যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান শিক্ষার্থীরা।
এক দশকেরও বেশী সময় ধরে বিদ্যালয়ের কমিটি না করা ও সহকারী প্রধান শিক্ষক হয়েও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ আকড়ে রাখার অভিযোগসহ প্রতিষ্ঠানে অসংগতিপূর্ন হিসাবসহ অভিযোগের অন্তনেই তাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মো.রেজাউল করিম সরকারের বিরুেদ্ধ।
এ সময় ছাত্র-ছাত্রীরা ‘দফা এক দাবি এক-রেজাউল স্যারের পদত্যাগ’ ও ‘জোউল স্যার স্বৈরাচার-এ মুহুর্তে স্কুল ছাড়’ সহ নানা শ্লোগান দিতে থাকে। ঐ প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান ইরা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নানা অনিয়ম দুর্নীতি শুরু করেন মো. জোউল করি সরকার।
এতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়, বিনা রশিদে অর্থ আদায়, ভুয়া বিল ভাউচারে টাকা আত্মসাত,নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ করেন। সাবেক শিক্ষার্থী মো. শাহিন আলম বলেন, নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে এক দশকের বেশী সময় ধরে বিদ্যালয়ের নিয়মিত কমিটি না করা,প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না দেয়া, ক্ষমতার অপব্যবহার করে অভিভাবকদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করে।
অভিভাবক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ওই শিক্ষক প্রায়ই অভিভাবকদের সাথে খারাপ আচরণ করতেন। অতিরিক্ত ফি নেয়া তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি গত ১৫ বছর ধরেই বিদ্যালয়কে নিজের পৈত্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। তার ক্ষমতার কাছে গত ১৫ বছরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও জিম্মি ছিলো।
তাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইংরেজী) মাকসুদুর রহমান বলেন, দীর্ঘ বছরেও বিদ্যালয়ে নিয়মিত কমিটি না করে নিজের একক আধিপত্য কায়েম করেছেন রেজাউল করিম সরকার। তার কাছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লাঞ্চিত হওয়া নিয়মিত ছিল। কোন কাজেই শিক্ষকদের সাথে পরামর্শ করার প্রয়োজন মনে করতে না তিনি।
এসব অভিযোগের ফিরিস্তির নিয়ে তাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. রেজাউল করিম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে তিনি বলেন, আমি কোন রাজনৈতিক দল না করলে অধিকার আদায়ের আন্দালেন কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছি। এ সময় তিনি মাটিরাঙার এক সাংবাদিক এর পরিচয় দিয়ে বিষয়গুলো তিনি জানেন এবং তাকে চেনেন বলে হুংকার ছেড়ে দায় এড়ানোর চেস্টায় ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. শরীফুল আলম বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কোন অনিয়ম থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।