আল-মামুন:: পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টার সাথে খাগড়াছড়ি জেলার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৩ আগস্ট ২০২৪) ১১টা প্রায় ২ ঘন্টা ব্যাপী চলে এই মতবিনিময় সভা। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্বে করেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মোঃ সহিদুজ্জামান। অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
এতে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার),খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বোধিসত্ত্ব দেওয়ান, ড. সুধীন কুমার চাকমা, বাংলা একাডেমি পুরুস্কার প্রাপ্ত গবেষক, সাহিত্যিক ও লেখক প্রভাংশু ত্রিপুরা, জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক (একুশে পদক প্রাপ্ত) মধুরা বিকাশ ত্রিপুরা,খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাংবাদিক প্রদীপ চৌধুরী,রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আজীবন সদস্য ধীমান খীসা, খাগড়াপুর মহিলা কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক ও সনাক জেলা সভাপতি শেফালিকা ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও খাগড়াছড়ি জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এ্যাড: জসীম উদ্দিন মজুমদার, খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ,উন্নয়ন ও সমাজকর্মী উসি মং মারমা, খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ত্রিনা চাকমা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খাগড়াছড়ি জেলা সমন্বয় জাহিদ হাসান,ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ কেন্দ্রীয় সভাপতি সুশীল জীবন ত্রিপুরাসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এতে অংশ নেন।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের শ্রাদ্ধাভরে স্মরণ করেন। পরবর্তীতে তিনি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় সফরের কথা উল্লেখ করে বলেন তাঁর খাগড়াছড়ি সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো খাগড়াছড়ি বন্যা পরিস্থিতি এবং পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা।
এ সময় তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন বাঙ্গালী এবং একজন উপজাতি প্রতিনিধি সহ দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে জেলা পরিষদ পুর্নগঠন করা হবে বলে উল্লেখ করেন। এছাড়াও তিনি বৈষম্যবিরোধ ছাত্র আন্দোলনকারীদের একটি বিশেষ চাহিদা দুর্নীতি দূরীকরণ, নিয়োগ বাণিজ্য দূর করা এবং তিনি তা বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলে উল্লেখ করেন।
এছাড়াও পার্বত্য অঞ্চলে মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করণ, জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানান। পরিশেষে পাহাড়ি বাঙ্গালি ভ্রাতৃপ্রেমী বসবাসযোগ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে সকলকে আহ্বান জানান।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খাগড়াছড়ি সমন্বক জাহিদ হাসান ছাত্রদের পক্ষ হতে মাননীয় উপদেষ্টা বরাবর কিছু দাবী উপস্থাপন করেন। দাবীসমূহ:- পার্বত্য চট্টগ্রামে যেসব সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছিলো সেগুলো পুনর্গঠন করতে হবে। জেলা পরিষদ সহ যে কয়টা সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে, সেগুলো যেন বৈষম্যহীন ভাবে নিয়োজিত হয়।
চাকরীর ক্ষেত্রে সব ধরনের বৈষম্য দূরীকরণ করতে হবে।কোনো প্রকার বৈষম্য রাখা যাবে না। সেটা হোক জাতিগত, হোক ধর্মগত, কোনোপ্রকার বৈষম্য করা যাবে না। পার্বত্য কোটায় পাহাড়ি বাঙ্গালির সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে সব ধরনের বৈষম্য দুর করতে হবে। পার্বত্য কোটায় যদি কেও সুবিধা পেয়ে থাকে সেটা সকল পার্বত্যবাসী পাবে। নির্দিষ্ট কোনো জাতি নয় বলে এতে উল্লেখ করা হয়।