স্টাফ রিপোর্টার:: ১২ বছরের কিশোরী আমেনা আক্তার এখন বিয়ের গল্প নিয়ে বনে গেছেন আমেনা বেগমে। হাবিব মিয়া নামে ৬৭ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের নাকি হয়েছে বিয়ে। গত ৫ মাস ধরে একই ঘরে বসবাস করে আসছে তারা। এমনটা লোক মুখে শুনা গেলেও বিয়ের বৈধ কোন কাগজ পত্র দেখাতে পারেনি তারা।
এমন ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে আধো কি তাদের বিয়ে হয়েছে ? নাকী বিয়ের নামে নাতনীর বয়সী কিশোরীকে ধর্ষণ করছে এই বৃদ্ধ ? খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার বর্ণাল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড ইদ্রিসপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। আমেনা আক্তার স্থানীয় কৃষক হায়দার আলীর মেয়ে এবং হাবিব মিয়া টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার,সোলাকুড়ির ফোনামারী গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, টাঙ্গাইলে পারিবারিক জীবনে ২ ছেলে ও ২ মেয়ে ও ১স্ত্রী রয়েছে। সর্ব ছোট মেয়ে অনার্স ২বর্ষে পড়ে। দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় ৩৫ বছর ধরে কাসাবা চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন হাবিব মিয়া। পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া কাসাবা চাষের অনুকুলে হওয়ায় তা চাষের উদ্দেশ্যে ৫ বছরে আগে অত্র এলাকায় আসেন তিনি। ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড়ি ভুমি লিজ নিয়ে কাসাবার চাষ করেন।
গত কয়েক বছর আমেনার বাবা হায়দার আলী হাবিব মিয়ার কাসাবার বাগানে দৈনিক মজুরিতে কাজ করার সুবাদে উভয়ের মধ্যে ভালো সমম্পর্ক গড়ে উঠে এবং বাগান দেখা শুনার দায়িত্ব দেয়া হয় আমেনার বাবাকে। সে থেকে আমেনাদের বাড়িতে আসা যাওয়া এক পর্যায় হায়দারের পিতা ও আমেনার দাদা আবুল খায়েরের সাথে বন্ধত্ব গড়ে তোলে হাবিব মিয়া।
এ দিকে দাদার সাথে বন্ধুত্বের কারণে আসা যাওয়ার মাঝে নাতনি কিশোরী আমেনার সাথে পরিচয় হয় হাবিব মিয়ার। হায়দারের অভাবের সংসারে দুর্বলতার সুযোগ গ্রহন করে সহযোগিতার অযুহাতে বিভিন্ন সময় সংসার খরচের টাকা,ডাক্তার দেখানো ও ঔষধ কিনে দেয়ার নাম করে আমেনার বাবা ও দিন মজুর দাদার অনুপস্থিতিতে সুযোগ বুঝে হায়দারের বাড়িতে যান হাবিব।
এতে হায়দারের পরিবারের সাথে গড়ে উঠে নিবির সম্পর্ক। জড়িয়ে পড়ে ১২বছরের কিশোরী আমেনার সাথে অনৈতিক সম্পর্কে। এ দিকে বাড়ি নির্মান,রেশন কার্ড ও ছেলের নামে ২ কানি (৮০শতক) জায়গা কিনে দেয়ার প্রলোবন দেখিয়ে কিশোরীর দাদা আবুল খায়েরের সহযোগিতায় গত ৫ মাস ধরে হায়দারের বাড়িতে এক সাথে থাকেন আমেনা ও হাবিব মিয়া।
ঘটনায় এলাকায় জানা জানি হলে আমেনার জন্মনিবন্ধন জালিয়াতি করে বয়স বাড়িয়ে গত ২৮মে রাতে বিয়ে হয় বলে সূত্র জানায়। তবে সরেজমিনে বিয়ের কথা উভয় স্বীকার করলেও বৈধ কোন ধরণের কাগজ পত্র দেখাতে পারেনী তারা।
সংশ্লিষ্ট বিয়ে রেজি: (কাজী ) সাহাব উদ্দিন বলেন, এজাতীয় কোন বিয়ের ব্যাপারে আমি অবগত নই। অত্র অফিসে কোন বিয়ে রেকর্ড হয় নাই। বিয়ে কে বা কোথায় হয়েছে তা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে কিশোরীর দাদা আবুল খায়ের বলেন, প্রয়োজনে জেলে যাব। তবুও সত্য কথা বলবো। নিজের ও পরিবারের মানসম্মান রক্ষার্থে জন্মনিবন্ধন পরিবর্তন করে বিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি।
কিশোরীর মা শিমা আক্তার বলেন, মেয়েটা অসুস্থ অনেক জায়গায় চিকিৎসা করা হয়েছে । ভালো হয় না। তাছাড়া মেয়ে পছন্দ করেছে তাই বিয়ে দেয়া হয়েছে।
কিশোরী আমেনা বেগম তার সাথে বৃদ্ধের ৫ মাসের সম্পর্ক আছে বলে স্বীকার করেছে। তবে মা এবং দাদার উপস্থিতিতে আর কিছু বলে নি। যতবার এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছে তার মা ও দাদার চোখের দিকে তাকিয়ে নীরব ভুমিকা পালন করেছে কিশোরী আমেনা।
কিশোরীর কথিত স্বামী বৃদ্ধ হাবিব মিয়া বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে সাথে পরিবার না থাকায় কারণে ভালো লাগেনা। তাই সহযোগিতার জন্য তিনি বিয়ে করেছেন। সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মো: ইলিয়াছ জানান,বিষয়টি আমি পরে শুনেছি। পরিবারটির দিকে তাকিয়ে মানবিক বিবেচনায় কিছু বলা হয়নী।
বর্ণাল ইউপি চেয়ারম্যান মো:ইলিয়াছ বলেন,বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। খোজ নিয়ে সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।