স্টাফ রিপাের্টার,রাঙামাটি:: সাজেক পর্যটন কেন্দ্রের সুইমিং পুল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে রাঙামাটির বাঘাইছড়ির উপজেলা প্রশাসন। সাজেক পর্যটন কর্তৃপক্ষ পাহাড় কেটে সুইমিং পুল বানিয়েছে। আর এ অপরাধে মেঘ পল্লী রিসোর্টে অভিযান চালিয়ে ২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। একই সাথে সুইমিংপুলটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
রাঙামাটির সাজেকে পাহাড় কেটে সুইমিংপুল তৈরিকে কেন্দ্র করে মিডিয়ায় প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে জনস্বার্থে ১ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হলে পরদিন ২ এপ্রিল আদালত রুল জারি করেন। বুধবার (৩ এপ্রিল) বাঘাইছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মেঘ পল্লী রিসোর্টের মালিক শাহ আলমকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া অনির্দিষ্টকালের জন্য সুইমিং পুল বন্ধ ঘোষণা করে লাল পতাকা টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়েছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার জানিয়েছেন, পাহাড় কেটে সুইমিং পুল তৈরী বন্ধে হাইকোর্টের রিট আদেশ আমরা পেয়েছি। তাই আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২ এপ্রিল সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিচ ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) হাইকোর্টে এ রিট আবেদন করে। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এইচআরপিবি’র চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানান, ‘সাজেকে পাহাড় কেটে সুইমিংপুল নির্মাণে কাজ করছে ‘মেঘ পল্লী রিসোর্ট’ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট ও পাহাড় ধসের ঝুঁকি রয়েছে।’ আদালত এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে সুইমিংপুল নির্মাণ কাজ বন্ধসহ সাজেক ও আশেপাশের এলাকায় অনুমতি ছাড়া পাহাড় কাটা বন্ধ ও অননুমোদিত পাহাড় কাটায় যারা জড়িত আছে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
পাশাপাশি সাজেকের পাহাড় রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের কোনো প্রকার অবহেলা আছে কি-না সেটি খতিয়ে দেখতে একজন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করিয়ে দ্রুততম সময়ে হলফনামার মাধ্যমে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জে.বি.এম. হাসান এবং রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ২ এপ্রিল এই আদেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রিটকারি সিনিয়র আইনজীবি অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। এরপরই নড়েচড়ে বসে উপজেলা প্রশাসন।