ডেস্ক রিপাের্ট:: জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান হিসেবে আগামী ৩ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন রওশন এরশাদ। শনিবার (৯ মার্চ) জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদপন্থীদের ডাকা দশম জাতীয় কাউন্সিলে তার নাম ঘোষণা করা হয়। নতুন কমিটিতে নির্বাহী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন কাজী ফিরোজ রশীদ।
কাউন্সিলে আগামী তিন বছরের জন্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন কাজী ফিরোজ রশীদ। সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা নির্বাচিত। এ ছাড়া পাঁচজন কো-চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে।
এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে জিএম কাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি প্রথমবারের ভাঙনের মুখে পড়লো। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিষ্ঠিত দলটি এ নিয়ে অন্তত ছয় বার বিভক্ত হলো। রওশন এরশাদ জিএম কাদের অংশের চিফ প্যাট্টনের দায়িত্বে ছিলেন।
দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে দলের দশম সম্মেলনে আগামী তিন বছরের জন্য এই কমিটি নির্বাচন করেন সারা দেশ থেকে আগত কাউন্সিলররা।
সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে গঠিত নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক সারোয়ার হোসেন মিলন রওশন এরশাদকে চেয়ারম্যান হিসেবে প্রস্তাব করেন। এ সময় কাউন্সিলররা হাত তুলে সমর্থন জানালে মিলন বলেন, ‘অনানুষ্ঠানিকভাবে এখন থেকে রওশন এরশাদ আমাদের দলের চেয়ারম্যান।’
এরপর দলের অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর দলের অন্যান্য সিনিয়র নেতার নাম ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, দলের নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে কাজী ফিরোজ রশীদ, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আবু হোসেন বাবলা, কো-চেয়ারম্যান হিসেবে সাইদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সাদ এরশাদ, গোলাম সারওয়ার মিলন এবং সুনীল শুভ রায় দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে গঠনতন্ত্র সংশোধনী প্রস্তাবে ১৯টি সংশোধনী প্রস্তাব করেন গঠনতন্ত্র সংশোধনী উপকমিটির আহ্বায়ক সুনীল শুভ রায়।
সম্মেলনের সভাপতির বক্তব্যে বেগম রওশন এরশাদ বলেন, আজ যদি এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত না হতো, তাহলে জাতীয় পার্টি হারিয়ে যেত। পল্লীবন্ধু এরশাদের জাতীয় পার্টিতে কোনো বিভেদ নেই উল্লেখ করে রওশন বলেন, আমরা এক আছি, ঐক্যবদ্ধ আছি এবং থাকব। আসুন, আমরা সবাই জাতীয় পার্টির পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হই।
কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, এরশাদের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলবেন না। এরশাদকে বাদ দিয়ে কোনো জাতীয় পার্টি বাংলার বুকে হবে না। আপনাদেরও আহ্বান করব, ঐক্যবদ্ধ হোন, দালালি করবেন না।
সম্মেলনে অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন আল আজাদ, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এম এ মতিন, জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী প্রমুখ।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে পুরো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিউটসহ মৎস্যভবন এবং শাহবাগ এলাকা। নানা রংবেঙের পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে সম্মেলনস্থল। সড়কদ্বীপগুলোতে লাগানো হয়েছে এরশাদ শাসনামলের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন। নির্মাণ করা হয়েছে দ্বিতল বিশিষ্ট মঞ্চ। ১২ হাজার কাউন্সিলর এবং ডেলিগেট উপস্থিতির লক্ষ্য চূড়ান্ত করে সম্পন্ন করা হয়েছে সকল আয়োজন।