
উপজেলাবাসীর জনস্রােতে প্রত্যাশার মানববন্ধন।
স্টাফ রিপাের্টার:: জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং অগ্নি নির্বাপনে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের মতো মৌলিক অবকাঠামো না থাকায় বছরের পর বছর ভোগান্তির শেষ নেই গুইমারা উপজেলাবাসীর। সে সরকারি হাসপাতাল ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের দাবিতে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায়। মানববন্ধনে গুইমারা তিন ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। এতে অচিরেই দাবী পুরণ না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি জানানো হয়।
এতে গুইমারার বিশিষ্ট সমাজ সেবক মো. ইউসুফ-এর সভাপতিত্বে আলা উদ্দিন আরিফ-এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাইফুল ইসলাম সোহাগ, মো. মাগফার হোসেন, মাহবুব আলী, মাওলানা ওসমান গণি, শিক্ষক বাবলু হোসেন, গুইমারা প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক আবদুল আলী,আবু বক্কর ছিদ্দিক, হরিপদ ত্রিপুরা, পুরোহিত স্বপন চক্রবর্তী, বিশ্ব কুমার ত্রিপুরা,আরমান হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, চাইলাপ্রু মারমা প্রমূখ।

বক্তারা বলেন, পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির অন্যতম ঐতিহ্যবাহী গুইমারা উপজেলায় প্রায় ৫৩,২৫৮ জন মানুষের বসবাস। অথচ এই বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য নেই কোনো সরকারী হাসপাতাল, নেই অগ্নি নির্বাপনের জন্য ফায়ার স্টেশন। যার ফলে অসুস্থ রাগীদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে মাটিরাঙ্গা অথবা মানিকছড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হয়। এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে ওঠে, যা প্রায়ই অকাল মৃত্যুর কারণ হচ্ছে।
অন্যদিকে অগ্নি নির্বাপনে বিলম্ব ও ফায়ার সার্ভিসের অভাবে অপুরিণয় ক্ষয়-ক্ষতি নতুন কোন ঘটনা ঘটনা নয়। গুইমারায় অগ্নিকাণ্ড মানেই সব কিছু হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পথে বসার ছাড়া আর কিছুই থাকেনা। এমন অবস্থায় বিভিন্ন সময় ঘটে যাওয়া অগ্নিকান্ডের ঘটনার কথা তুলে ধরে অরর্ণনীয় ক্ষতির কথা তুলে ধরা হয় মানববন্ধনে।

সম্প্রতি রামসুবাজারে প্রায় ৭৩টি দোকান এবং জালিয়াপাড়া বাজারের ১৯টি দোকান ভস্মীভূত হওয়ার ঘটনা তুলে ধরে বক্তারা আরো বলেন, ২০ কিলোমিটার দূর থেকে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় মুহূর্তের মধ্যে সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এই ঘটনাগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন গুইমারার জনগণের জন্য কতটা অপরিহার্য।
মানববন্ধনে বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে হাসপাতাল ও ফায়ার সার্ভিসের রূপরেখা না দেখতে পেলে ২০২৬ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তাঁরা আরও অভিযোগ করেন যে গুইমারা উপজেলায় একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলেও সেখানে কোনো ডাক্তারের উপস্থিতি নেই। তাঁরা হুঁশিয়ারি দেন, আগামী রবিবার থেকে যদি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার না পাওয়া যায়, তবে তাতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। উপস্থিত সর্বস্তরের জনগণ সরকারের কাছে অবিলম্বে গুইমারা উপজেলায় একটি পূর্ণাঙ্গ সরকারি হাসপাতাল স্থাপন এবং একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের জোর দাবি জানান।